প্রকাশিত: ১০/১২/২০১৬ ৭:৫৪ এএম

নিউজ ডেস্ক::
কক্সবাজারের সীমান্ত উপজেলা টেকনাফের নাফনদীতে নৌকায় এক সন্তান প্রসব করলেন সনজিদা বেগম (২৫) নামে রোহিঙ্গা নারী। গত বৃহস্পতিবার ভোর রাতে নাফনদীতে নৌকায় পাড়ি দেওয়ার সময় মাঝ নদীতে এ সন্তান প্রসব হয়েছে।
স্থানীয়দের মতে, ওই সময় মা নূর বেগম ও তিন বোন, শ্বাশুর-শ্বাশুরী ছিলেন তার সঙ্গি। এই নৌকায় ২১ জন নারী, পুরুষ ও শিশু ছিল। সন্তানের বাবা মিয়ানমার মংডু হাতিপাড়া এলাকার নূরুল আলমের ছেলে মোঃ মুছা। তবে নৌকায় জম্ম নেওয়া সন্তানের বাবা মুছা এখনো কোথায় জানেনা। এ নৌকায় পালিয়ে আসা রোহিঙ্গারা নিকট আত্মীয়-স্বজন। তবে জম্ম নেওয়া নব জাতকের নাম পাশ্বের অন্য রোহিঙ্গারা সাগর বলে ডাকছে, তার মাতৃভূমি কোন দেশে তা নির্ণয় করা কঠিন হয়ে পড়েছে। এই সনজিদা নবজাতকসহ ৪ সন্তানের জননী বলে জানায়।
শুক্রবার (৯ ডিসেম্বর) দুপুরে টেকনাফ লেদা আন রেজিষ্ট্রাট রোহিঙ্গা ক্যাম্প সংলগ্ন লেদা এলাকার বিধবা আমিনার বাড়ীতে এই নারীসহ মা, বোন ও সন্তানদের নিয়ে আশ্রয় হয়েছে বলে জানিয়েছেন।
মা নূর বেগম জানান, মিয়ানমারে অত্যাচার নির্যাতনের সময় তার মেয়ের জামাইকে সেনাবাহিনী কি ধরে নিয়ে যায়, নাকি মেরে ফেলেছে এখনো পর্যন্ত তার ভাগ্যে কি ঘটেছে জানিনা। মেয়ে সনজিদার সন্তান প্রসবের সময় কাছাকাছি চলে আসায় বোন ও পরিবারের অন্যদের নিয়ে হাতিপাড়ায় কোন মতে অবস্থান করছিলাম। এসময় চলছে হত্যা, ধর্ষন ও জালাও পুড়াওসহ নানা নির্যাতনের ঘটনা।
বিধবা আমিনা জানায়, মিয়ানমারের রাখাইয়ন এলাকার পরিস্থিতি দিন দিন ভয়ংকর হয়ে উঠায় প্রাণের ভয়ে গত ৫ দিন আগে গর্ভবতী মেয়েসহ অন্যদের নিয়ে লোকজনের সাথে পাশ্বের শীলখালীতে গিয়ে দুইদিন অবস্থান করি, এর পর কুয়াইর হালিতে দুইদিন থাকি। পরের দিন দালালের সাথে বাংলাদেশে যোগাযোগ হলে জনপ্রতি ২৫ হাজার মিয়ানমার কিয়েটে নিয়ে বাংলাদেশ থেকে নৌকায় গিয়ে পরিবারের ১০ জন ও মেয়ের শ্বাশুরের পরিবারের ১১ জনসহ ২১ মিয়ানমার কুয়াইর হালি এলাকা দিয়ে রাত ১২ টায় নৌকায় উঠে। এই নৌকায় আসার পথে মাঝ নদীতে সনজিদার প্রসব বেদনা শুরু হয়। সেই নৌকায় মা, শ্বাশুরী ও বোনদের সহায়তায় তার সন্তান জম্ম নেয়। এসময় নদীতে একটি স্পীড বোট দেখে পাশ্বের এক দ্বীপের কেওরা বাগানের দিকে ডুকে পড়ে। সেখানে বোরকা ও অন্য কাপড় নিয়ে নবাজাতকের সেবা যত্মের পর সকাল ৭ টার দিকে টেকনাফের হোয়াইক্যং লম্বাবিল এলাকায় পৌছে। সেখান থেকে মেয়েকে দুই জনের সহায়তায় পাশ্বের এক এলাকার খড় কোঠা (কুইজ্জা)তে রাখা হয়। সেখান থেকে স্থানীয় এক লোক গাড়ীতে তুলে দেয়। ওইদিন দুপুরের পর টেকনাফ লেদা রোহিঙ্গা ক্যাম্পে এসে কোন স্থান না পেয়ে পাশ্বের এলাকায় বিধবা এক নারীর বাড়ীতে আশ্রয় নেয়। তবে আর্থিক সংকতের কারনে নবজাতক ও প্রসুতি মা কোন ধরনের চিকিৎসা সেবা পাচেছনা। তার পরিবারের অন্যরাও অনাহার ও চিকিৎসা পাচেছনা বলে জানিয়েছেন। তার মতে সেদিন আরো অনেক রোহিঙ্গা নৌকায় এ পারে চলে আসেন। এখনো অনেক লোক আসার অপেক্ষায় রয়েছে বলে জানায়।
অন্যদিকে ২ বর্ডার র্গাড ব্যাটলিয়ান অধিনায়ক লে. কর্ণেল মোঃ আবু জার আল জাহিদ জানান, গত বৃহস্পতিবার রাত থেকে শুক্রবার সকাল পর্যন্ত টেকনাফ সীমান্তের তিনটি পয়েন্ট দিয়ে নাফনদীর শূণ্যরেখা অতিক্রম কালে রোহিঙ্গা বোঝায় ৫টি নৌকা মিয়ানমারে ফেরত পাঠানো হয়েছে।
তিনি আরও জানান, সীমান্তে বিজিবির কড়া নজরদারী রয়েছে। ফলে সীমান্ত দিয়ে আগের মত রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশের চেষ্টা নেই। তবে সীমান্ত ও উপক’লে রোহিঙ্গা পারাপারের চিহ্নিত স্থান গুলোতে আগের চেয়ে টহল জোরদার করা হয়। তাছাড়া দেশের অভ্যন্তরে রোহিঙ্গা না ঢুকতে কক্সবাজার-টেকনাফ সড়কের বিভিন্ন স্থানে বিজিবির একাধিক চেকপোষ্ট বসানো হয়েছে বলে জানায়।
তবে ফেরত পাঠানো প্রতি নৌকায় ১২ থেকে ১৪ জন রোহিঙ্গা নারী, পুরুষ ও শিশু ছিল বলে জানা গেছে।

পাঠকের মতামত

বাসের সঙ্গে মুখোমুখি সংঘর্ষে দুমড়ে-মুচড়ে গেল ইউএনওর গাড়ি

নির্বাচনী দায়িত্বপালন করতে গিয়ে ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) গাড়ি দুর্ঘটনার শিকার হয়েছে। দুর্ঘটনায় ...

সময়ের আলো’র নাইক্ষ‌্যংছড়ি প্রতিনিধি হিসাবে নিয়োগ পেলেন সাংবাদিক নুর মোহাম্মদ

দেশের শীর্ষ স্থানীয় জাতীয় দৈনিক সময়ের আলো পত্রিকায় নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলা প্রতিনিধি হিসেবে চুড়ান্ত নিয়োগ পেলেন ...